সম্প্রতি ‘স্টার আনন্দ’ চ্যানেলে বহুবার প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে তৃণমূল ‘সুপ্রিমো’ ও রেলমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, ‘আমি মিথ্যা কথা বলি না।’
সি পি আই (এম) নেতা ও রাজ্যের আবাসন ও জনস্বাস্থ্য দপ্তরের মন্ত্রী গৌতম দেব এই দাবি সম্পর্কে বলেন, মমতা ব্যানার্জির এই দাবি বছরের সেরা তামাশা। মমতা ব্যানার্জি ও তৃণমূলের রাজনীতিই মিথ্যাচারের ওপরে দাঁড়িয়ে আছে। গোড়া থেকে এখনও পর্যন্ত যেসব মিথ্যাচার ওরা করেছে, একটার পর একটা ঘটনা লিখে বই ছাপিয়ে দিয়েছেন সি পি আই (এম) নেতা রবীন দেব। ‘সেই মিথ্যাচার আজও চলছে’ নামে ওই বইতে উল্লেখ করা প্রতিটি ঘটনা মিথ্যাব প্রমাণ করার তথ্যও রয়েছে তাঁর কাছে। মমতা ব্যানার্জির যদি সাহস থাকে তবে উনি আমাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করুন!
ওই সাক্ষাৎকারে মমতা ব্যানার্জি যে বক্তব্য রেখেছেন, তা উদ্ধৃত করে প্রতিটির জবাব দিয়েছেন গৌতম দেব। নিচে তা দেওয়া হলো:
১. মমতা ব্যানার্জি: ‘গরিবদের ২টাকা কেজি চাল কেন্দ্রের প্রকল্প, বামফ্রন্টের না..।’
গৌতম দেব : পর্যাপ্ত বাজে কথা বলে উনি অভ্যস্ত, তাই একথা বলছেন। একটু খোঁজ নিলেই যে কেউ জানতে পারবেন,কেন্দ্রীয় সরকার দারিদ্র্যসীমার নিচের মানুষদের জন্য চাল দেয় ৫টাকা ৬৫পয়সা প্রতি কেজি দরে। রাজ্য সরকার প্রতি কেজিতে ৩টাকা ৬৫পয়সা ভরতুকি দেয় বলেই গরিব মানুষ ২টাকা কেজি দরে চাল পান। এরজন্য রাজ্য সরকারকে প্রতি বছর ৪৫০কোটি টাকা ভরতুকি দিতে হয়। পশ্চিমবঙ্গে বি পি এল তালিকা অনুযায়ী এখন ২কোটি ৬৪লক্ষ মানুষ ২টাকা কেজি দরে চাল পান। আর দেড় মাস বাদে অষ্টম বামফ্রন্ট সরকার যখন গঠিত হবে, সেই সরকারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ১০হাজার টাকা পর্যন্ত আয় এমন পরিবারকেও আমরা ২টাকা কেজি দরে চাল দেব। আরো দেড়-দু’কোটি মানুষ এই সুবিধা পাবেন।
২. মমতা ব্যানার্জি : ‘রাজ্যের ৮০শতাংশ পুলিসকর্মী সি পি এম-এর ক্যাডার..।’
গৌতম দেব: বামফ্রন্ট সরকার এরাজ্যে ৩৫বছর রয়েছে। কিছুদিন বাদে এমন পুলিস পাওয়া যাবে না, যার চাকরি বামফ্রন্ট সরকারের আমলে হয়নি। উনি হয়তো সেটা ভেবেই এমন কথা বলেছেন। মজার কথা হলো, ওঁর কথায় যারা চাকরি জীবনে ‘সি পি এম-র ক্যাডার’, তারাই অবসরের পর যাচ্ছে কালীঘাটের বাড়িতে। তাহলেই বুঝুন!
৩. মমতা ব্যানার্জি : ‘কেন্দ্রীয় সরকারের অর্ধেক কর্মী রেলে কাজ করেন..।’
গৌতম দেব : বর্তমানে গোটা দেশে কেন্দ্রীয় সরকারী কর্মচারীর সংখ্যা ১কোটি ২০লক্ষ। আর রেলে এখন কাজ করেন মোট ১৪ লক্ষের একটু কম। ১কোটি ২০লক্ষের অর্ধেক ১৪ লক্ষ, এমন অঙ্ক কালীঘাটের বাড়িতেই বোধহয় শেখা সম্ভব!
৪. মমতা ব্যানার্জি : ‘তৃণমূলের লক্ষাধিক কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে..।’
গৌতম দেব : ফালতু কথা! এরাজ্যে বিভিন্ন মামলায় জামিনঅযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে এমন ব্যক্তির মোট তালিকা নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। সংখ্যাটা হলো ৮২হাজার ২৭৭জন। এর মধ্যে খুনী, চোর, ডাকাত যেমন আছে, তেমনি কংগ্রেস, তৃণমূল, সি পি আই (এম) প্রভৃতি সব দলের লোকেরই নাম আছে। আমরা সরকারে আছি, আমাদের কাছে সাম্প্রতিকতম তালিকাও আছে। মমতা ব্যানার্জি বা পার্থ চ্যাটার্জির কাছে যদি শুধু ওদের দলেরই এমন ১লক্ষ লোকের নাম থাকে, তবে ওঁরা তালিকা দিন, আমরা মিলিয়ে নেব!
৫. মমতা ব্যানার্জি : ‘রাজ্যের ৫০শতাংশ গ্রামে এখনো বিদ্যুৎ যায়নি..।’
গৌতম দেব : একদম অসত্য কথা! পশ্চিমবঙ্গে মোট মৌজার সংখ্যা ৩৭, ৯১০টি। বিদ্যুৎ পৌঁছেছে ৩৭,৭৫৫টিতে। অল্প কিছু বাকি আছে। দেখবেন, গতবার আমরা ইশ্তেহারে বলেছিলাম, পাঁচ বছরে সমস্ত মৌজায় বিদ্যুৎ পৌঁছাবো। এবারে সচেতনভাবেই সেকথা আমরা লিখিনি, কারণ যা বাকি আছে তা অল্পদিনেই হয়ে যাবে। এবারে আমরা লিখেছি, অষ্টম বামফ্রন্ট সরকার বিদ্যুৎহীন সমস্ত বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেবে। সেকাজ আমরা পাঁচ বছরে ধাপে ধাপে করবো।
৬. মমতা ব্যানার্জি : ‘এই সময়ে আমরা একদিনও বনধ্ বা অবরোধ করিনি..।’
গৌতম দেব : তৃণমূল বনধ্ বা অবরোধ করেনি, একথা শুনলে তো মমতা ব্যানার্জির বাড়ির লোকেরা পর্যন্ত হাসবে। ২০০৬ সাল থেকে যদি ধরা যায়, তবে ওই বছরের ৩০শে নভেম্বর বিধানসভা ভাঙচুর, কলকাতায় অবরোধ, বাস ভাঙচুর করে তৃণমূল। ১লা ডিসেম্বর বন্ধ ডাকে। ২রা ডিসেম্বর ট্রেন অবরোধ, হামলা করে। ৫ই ডিসেম্বর এস ইউ সি-নকশাল বন্ধকে তৃণমূল সমর্থন করে। ৬ই ডিসেম্বর রাজ্যে ২ ঘণ্টার জন্য রাস্তা ও রেল অবরোধ করে। ওই বছরের ২১শে ও ২২শে ডিসেম্বর ৪৮ ঘণ্টা বন্ধ ডেকেছিল, যদিও ২০শে ডিসেম্বর রাতে তা প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর ২০০৭ সালের ১৬ই মার্চ তৃণমূল বাংলা বন্ধ করে। ২০০৭ সালের ১২ই নভেম্বর কংগ্রেস-তৃণমূল কংগ্রেস এবং বি জে পি সকলে মিলে বন্ধ ডাকে, ওইদিন গোটা রাজ্যে হামলা হয়েছিল মানুষের ওপর। এমন তালিকা আরো আছে। মানুষ সেটা জানেন।
৭. মমতা ব্যানার্জি : ‘আমি ছোট মন্ত্রিসভা করবো..।’
গৌতম দেব : চাইলেই বেশি মন্ত্রী করা যায় না। সংবিধান সংশোধন করে আইন হয়েছে যে মোট সাংসদ বা বিধায়কের ১৫শতাংশের বেশি মন্ত্রী করা যাবে না। উনি সেদিন ৪-৫টা গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের নামও বলে দিয়েছেন যেগুলো নিজের হাতে রাখবেন। আসলে মমতা ব্যানার্জি সবচেয়ে খুশি হতেন যদি উনি নিজে একাই মন্ত্রী হতে পারতেন। আর এখন এসব অর্থহীন কথা বলছেন কেন? যখন ১৯টা এম পি নিয়ে নিজেসহ ৭জনকেই মন্ত্রী করলেন, তখন এসব ছোট মন্ত্রিসভা করার কথা মনে ছিল না? আবার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে মন্ত্রী করার জন্য ঘুরঘুর করছেন! আমরা বামপন্থীরা তো প্রথম ইউ পি এ সরকারের সময়ে ৬১জন এম পি নিয়ে সমর্থন করলেও একজনও মন্ত্রী হইনি!
৮. মমতা ব্যানার্জি : ‘বিধান পরিষদ গঠন করবো..।’
গৌতম দেব : দু’-একটি ছাড়া প্রায় সব রাজ্যে তুলে দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের কোনো বিধায়ক বিধানসভায় গত পাঁচ বছরে একবারও বলেনি, উল্লেখ পর্যন্ত করেনি। তাহলে হঠাৎ একথা বলছেন কেন? আসলে যাদের প্রার্থী করতে পারেননি, তাদের বিক্ষোভ চাপা দিতেই এসব কথা বলতে বাধ্য হয়েছেন।
৯. মমতা ব্যানার্জি : ‘ রাজ্য সরকার দেউলিয়া, দু’লক্ষ কোটি টাকার বেশি দেনা..।’
গৌতম দেব : মমতা ব্যানার্জি যে সরকারের মন্ত্রী, এই মুহূর্তে সেই কেন্দ্রীয় সরকারের মোট দেনার পরিমাণ ৩৯লক্ষ কোটি টাকা। উত্তর প্রদেশের দেনা ২লক্ষ ২১হাজার কোটি টাকা, মহারাষ্ট্রের দেনা ২লক্ষ ৭হাজার কোটি টাকা, অন্ধ্র প্রদেশের দেনা ১লক্ষ ২৭হাজার কোটি টাকা দেনা, আর পশ্চিমবঙ্গের দেনা ১লক্ষ ৮৬হাজার কোটি টাকা। বড় রাজ্যগুলোর মধ্যে আর্থিক দিক থেকে শক্তিশালী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। আর আমাদের রাজ্যের এই পুঞ্জীভূত দেনা জমা হয়েছে সেই ১৯৪৭সাল থেকে। আরেকটা তথ্য, গত ৩০মাসে আর্থিক সঙ্কট মেটাতে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক ব্যাঙ্কগুলো থেকে ঋণ নিয়েছে ৯লক্ষ কোটি টাকা।
১০. মমতা ব্যানার্জি : ‘আমি গত দু’বছরে পশ্চিমবঙ্গে রেলের পক্ষ থেকে ১লক্ষ কোটি টাকা এনেছি..।’
গৌতম দেব : মমতা ব্যানার্জি রেলমন্ত্রী হিসাবে গোটা দেশের জন্য ২০১০-১১সালে ৪১ হাজার ৬২৬কোটি টাকা এবং ২০১১-১২সালে ৫৭হাজার ৬৩০কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন। দু’বছরের মোট বাজেট মেলালে প্রায় ১লক্ষ কোটি টাকা হয়, গোটা দেশের জন্য। আর উনি বলছেন, শুধু পশ্চিমবঙ্গেই নাকি ১লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন! একটু-আধটু লেখাপড়া জানা লোকও এসব বিশ্বাস করবেন না!
১১. মমতা ব্যানার্জি : ‘অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য প্রকল্প কেন্দ্রের...।’
গৌতম দেব : আবার মিথ্যা কথা। কেন্দ্রীয় সরকারের যে প্রকল্প আছে তা শুধু বি পি এল-র জন্য, যার মধ্যে অধিকাংশ অসংগঠিত শ্রমিক পড়েন না। আমরা যে ২৫লক্ষের বেশি অসংগঠিত শ্রমিককে ইতোমধ্যেই প্রভিডেন্ট ফান্ড প্রকল্পে যুক্ত করেছি, তাতে ৬১টি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের সমস্ত শ্রমিক পড়বেন। এটা রাজ্য সরকারের নিজস্ব প্রকল্প। অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য প্রভিডেন্ট ফান্ড প্রকল্প ছাড়াও অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রকল্প, ক্ষেতমজুরদের জন্য প্রভিডেন্ট ফান্ড, নির্মাণশ্রমিকদের জন্য পেনশন, পরিবহন শ্রমিকদের জন্য পেনশন, পরিবহন শ্রমিকদের ছেলেমেয়ের জন্য শিক্ষাভাতা, বিড়ি শ্রমিকদের জন্য প্রভিডেন্ট ফান্ড ছাড়াও আরো অনেকগুলি প্রকল্প আছে। অষ্টম বামফ্রন্ট সরকার অসংগঠিত শ্রমিকদের জন্য এই সুবিধা আরো প্রসারিত করবে।
১২. মমতা ব্যানার্জি : ‘রেলের ভাড়া বাড়াইনি, কর চাপাব না..।’
গৌতম দেব : গত দু’বছরে ভাড়া না বাড়িয়ে রেল বাজেট করেছেন কেন্দ্রের কাছ থেকে যথাক্রমে ১৫হাজার ৮৭৫কোটি টাকা ও ২০হাজার কোটি টাকা ধার নিয়ে। কেন্দ্র টাকা দিয়েছে কর চাপিয়েই। কর চাপাননি, কিন্তু রেলের পণ্য মাসুল বাড়িয়েছেন। তাছাড়া বাজার থেকে দু’বছরে যথাক্রমে ৯হাজার ১২০কোটি টাকা এবং ২০হাজার ৫৯৪কোটি টাকা বন্ড তুলেছেন। বছর বছর এই বিপুল ধার রেলকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে? কার জন্য এই ধারের বোঝা উনি রেখে যাচ্ছেন?
১৩. মমতা ব্যানার্জি : ‘ গত এক বছরে ৭১০কিমি রেললাইন করেছি..।’
গৌতম দেব : সংসদে মিথ্যা কথা বলার জন্য মমতা ব্যানার্জির বিরুদ্ধে স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস জমা পড়েছে। উনি রেল বাজেট করার সময় বলেছেন, ৭০০কিমি রেল লাইন করেছি। অথচ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক তার রিপোর্টে বলেছে, গত ছয়মাসে মাত্র ৫৯কিমি রেললাইন হয়েছে। লাইন ডাবলিং বলেছেন ৭০০কিমি, অর্থমন্ত্রক বলেছে ছয়মাসে ৫৫কিমি। মমতা ব্যােনার্জি বলেছেন, ইলেকট্রিফিকেশন হয়েছে ১০০০ কিমি, কিন্তু অর্থমন্ত্রক বলছে ছয়মাসে মাত্র ২৪৩ কিমি। উনি বলেছেন, গেজ পরিবর্তন হয়েছে ৮০০কিমি, অর্থমন্ত্রক বলেছে ছয়মাসে মাত্র ১৪০ কিমি। ওঁর যা দাবি, অর্থমন্ত্রকের দেওয়া তথ্যকে ডবলের ডবল করলেও হয় না।
১৪. মমতা ব্যানার্জি : ‘রেলে ১লক্ষ ৮০হাজার লোকের কর্মসংস্থান করে দিয়ে এসেছি..।’
গৌতম দেব : ফালতু কথা বলার একটা সীমা আছে! সরকারী চাকরিতে নিয়োগ করার একটা নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া আছে। তার একটি প্রক্রিয়ার কথাও উনি বলতে পারবেন না। রেল বাজেটের অন্তত একটি জায়গায় মমতা ব্যানার্জি দেখান যে, উনি এই ১লক্ষ ৮০হাজার লোকের বেতন বাবদ টাকা বরাদ্দ রেখেছেন! উনি দেখান, রেল বোর্ডের কোন বৈঠকে এই কর্মসংস্থানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে! কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রকের কাছে কবে রেলমন্ত্রক এই ফাইল পাঠিয়েছে? কবে অর্থমন্ত্রক প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেই ফাইল অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছে? কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার কোন বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে? মুখে বললাম, ১লক্ষ ৮০হাজার লোকের কর্মসংস্থান করে দিয়ে এসেছি, আর হয়ে গেলো, বিষয়টা অত সোজা না! পারলে উনি কাগজ দেখান।
১৫. মমতা ব্যানার্জি : ‘পাহাড়ে, জঙ্গলমহলে তিন মাসে শান্তি ফেরাব..।’
গৌতম দেব : কোন্ ফরমুলায় করবেন? মমতা ব্যানার্জির কোন্ ফরমুলায় মাওবাদীরা হারমনিয়াম নিয়ে হরিকীর্তন করবেন মানুষ খুন ছেড়ে? বিমল গুরুঙ সাদা পতাকা নাড়বে পাহাড়ে? যদি ফরমুলাটা বলে দেন, তবে আমরা বুদ্ধদাকে বলবো তিন মাসের জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদ ছেড়ে দিতে।!
১৬. মমতা ব্যানার্জি : ‘মাওবাদীরা সি পি এম-র আমদানি..।’
গৌতম দেব : যে মাওবাদীদের উনি ‘সি পি এম-র আমদানি’ বলছেন, সেই মাওবাদীরাই মমতা ব্যানার্জিকে মুখ্যমন্ত্রী চাইছে! আর সি পি আই (এম) নেতা-কর্মীদের খুন করছে।
১৭. মমতা ব্যানার্জি : ‘সি পি এম এখন কোমায়..।’
গৌতম দেব : ওঁর কথায় ব্রিগেডে লক্ষ লক্ষ মানুষ ‘কোমা’ থাকা অবস্থায় এসেছিলেন! কলেজে কলেজে ছাত্ররা এস এফ আইকে জেতাচ্ছে ‘কোমা’য় আছে বলে! প্রাথমিক শিক্ষকরা বিপুলভাবে বামপন্থীদের জিতিয়েছে ‘কোমা’য় আছে বলে! আমি একজন ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করে জানলাম, কোমা থাকলে বাঁচানো সম্ভব, কিন্তু ব্রেন ডেথ হলে আর ফেরানো সম্ভব না। খাবে-দাবে, কিন্তু আর স্বাভাবিক হবে না। তাই মমতা ব্যানার্জির কথায় যদি ‘সি পি এম এখন কোমায়’ থাকে, তাহলে ওঁর তো ‘ব্রেন ডেথ’ হয়ে গেছে।
১৮. মমতা ব্যানার্জি : ‘হিন্দুদের ভাগ থেকে মুসলিমদের সংরক্ষণ..।’
গৌতম দেব : মারাত্মক কথা বলেছেন, যা বি জে পি-র থেকেও বেশি সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক কথা। দাঙ্গা বাঁধানোর মতো কথা এটা। সারা ভারতে প্রথম পশ্চিমবঙ্গে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য গরিব মুসলিমদের জন্য সংরক্ষণ করার এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটা হিন্দুদের ভাগ থেকে নয়, সমস্ত অনগ্রসর হিন্দুদের জন্য সংরক্ষণ করার পর সুপ্রিম কোর্টের রায় মেনে অবশিষ্ট অংশ থেকে করা।
No comments:
Post a Comment